আজিজুর রহমান জয় : কান্ট্রি প্রধান
হবিগঞ্জের মাধবপুরে সরকারি মালিকানাধীন জগদীশপুর ও তেলিয়াপাড়া চা বাগানে কর্মরত শ্রমিকের সাপ্তাহিক রেশন তলব পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। ন্যাশনাল টি কোম্পানি পরিচালনা পর্ষদ বাগানে ম্যানেজারদের টাকা না দেওয়ায় দুটো বাগানের শত শত শ্রমিকের পাওনা বকেয়া রয়েছে।
দরিদ্র শ্রমিকরা তাদের মজুরি ও রেশন না পেয়ে কষ্টে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এ নিয়ে চা বাগানে শ্রমিকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
জগদীশপুর ও তেলিয়াপাড়া চা বাগানের শ্রমিকরা জানান, ১৭০ টাকা দৈনিক হাজিরায় তারা চা বাগানে ৮ ঘণ্টা কাজ করে আসছেন। এই সামান্য মজুরি এবং সপ্তাহে যে পরিমাণ আটা দেওয়া হয় তা দিয়ে কোনোভাবেই তাদের সংসার চলে না। বিকল্প কোনো কাজ না থাকায় অবহেলিত শ্রমিকরা স্বল্প সুবিধায় বাগানে বাধ্য হয়ে কাজ করছেন। কিন্তু এখন কাজ করার পরও ৩-৪ সপ্তাহ ধরে শ্রমিকদের রেশন তলব পরিশোধ করা হচ্ছে না। বাগান কর্তৃপক্ষ আর্থিক সংকটের অজুহাত দেখিয়ে তা বন্ধ করে দিয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে চা বাগানে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। কারণ দুই চা বাগানে প্রায় ১০ হাজার পরিবার রয়েছে। কাজ বন্ধ হয়ে গেলে বাগানে মারাত্মক অভাব দেখা দেবে।
জগদীশপুর চা বাগানের শ্রমিক নেতা রমেশ কৈরি বলেন, বাগানের মানুষ সপ্তাহ যে রেশন তলব পায় তা দিয়ে এক সপ্তাহ টেনেটুনে কোনো রকম সংসার চালান। এখন দ্রব্যমূল্যের দাম খুব বেশি, তাই দৈনিক ১৭০ টাকার তলবে কোনো ভালো খাবার কিনে খাওয়া যায় না। শ্রমিকরা কোনোরকম খাবার খেয়ে জীর্ণশীর্ণ কুঁড়েঘর জীবন কাটান। কয়েক সপ্তাহ ধরে রেশন তলব বন্ধ রয়েছে। কোম্পানির অর্থ সংকট থাকায় ব্যাংক থেকে এখন টাকা মিলছে না। এ কারণে শ্রমিকের টাকা দেওয়া হচ্ছে না। মজুরি রেশন না পেয়েও শ্রমিকরা কাজ করে যাচ্ছেন। একই কথা বলেন তেলিয়াপাড়া চা বাগানের শ্রমিক নেতা বীরেন বুনার্জিও।
জগদীশপুর চা বাগানের ম্যানেজার লিমন ফকির বলেন, প্রতি বছর চা বাগানে মোটা অঙ্কের লোকসান হয়। কারণ দিন দিন চায়ের উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে গেছে। কিন্তু চায়ের দর বাড়ছে না। এখন শ্রমিকদের মজুরি রেশনসহ যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করতে কোম্পানিকে কঠিন বেগ পেতে হচ্ছে। টাকা না থাকায় এখন বাগানে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করতে কোম্পানি আন্তরিক রয়েছে। টাকা ম্যানেজ হলেই তাদের সমস্যা মিটে যাবে।