
আজিজুর রহমান জয়, বিশেষ প্রতিবেদক
হবিগঞ্জে ৯টি উপজেলায় সবগুলো উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের পদ শূন্য। বছরের পর বছর এসব পদ শূন্য থাকলেও নিয়োগ বা পদায়ন করা হচ্ছেনা কাউকেই। জেলার ছয়টি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নেই। ভারপ্রাপ্ত দিয়েই চলছে এসব পদের কার্যক্রম। খালি রয়েছে ৬৫ জন সহকারী শিক্ষকের পদ। ফলে জেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
রোববার (৫ অক্টোবর) দুপুরে হবিগঞ্জ বিকেজিসি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে পাঁচ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি। সেখানে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে বক্তব্য দেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফরিদা নাজমীন, বিকেজিসি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নাসিমা আক্তার খানম, সহকারী শিক্ষক নুরুল হুদা, চুনারুঘাট রাজার বাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবুল মঈন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের এন্ট্রিপদ ৯ম গ্রেডে উন্নীত করে চার স্তরীয় পদসোপান, অনতিবিলম্বে আঞ্চলিক উপপরিচালকের প্রশাসনিক এবং আর্থিক ক্ষমতা সংরক্ষণসহ মাধ্যমিকের সব কার্যালয়ের স্বাতন্ত্র্য ও মর্যাদা রক্ষা, বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখার সব শূন্য পদে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন এবং বকেয়া সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেলের মঞ্জুরি আদেশ প্রদান করতে হবে।
তারা আরও বলেন, উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষকরা বাদে একই পদমর্যাদার অন্যান্য কর্মকর্তাদের ৯ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষকদের তা করা হচ্ছে না। এটি চরম বৈষম্য ও অমানবিক। শিক্ষকরা অবিলম্বে স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে তারা বাধ্য হবেন বলে জানান।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফরিদা নাজমীন জানান, জেলায় ছয়টি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট ১৮০ জন শিক্ষকের পদ রয়েছে কিন্তু কর্মরত আছেন ১১৫ জন। ৯টি উপজেলার একটিতেও শিক্ষা কর্মকর্তা নেই। ভারপ্রাপ্ত দিয়েই এসব পদের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। শিক্ষক স্বল্পতার কারণে একেকজন শিক্ষক দৈনিক ৪-৫টি ক্লাস নিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন।
তিনি বলেন, পদোন্নতি বঞ্চিত হওয়ায় শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। অনেক শিক্ষকই সহকারী শিক্ষক থেকেই অবসরে যান, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টের।
চুনারুঘাট রাজার বাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবুল মঈন বলেন, তার বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পদ আছে ১৭টি। কিন্তু কর্মরত আছেন মাত্র ৯ জন। শ্রেণিকক্ষও আছে ৯টি। সব শিক্ষককেই বিরামহীন ক্লাস নিতে হয়। কোনো কারণে যদি একজন শিক্ষক অসুস্থ হন বা ছুটিতে যান, তাহলে একটি শ্রেণিতে ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয়ওনা। আমাদের অত্যন্ত কষ্ট করে পাঠদান করতে হচ্ছে।