অপসারণ কৃত পদ ফিরে পাওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করছেন দেশের সকল উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানগণ। এর আগে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে তারা।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন পালন করেন তারা।
এ সময় সদ্য অপসারিত জনপ্রতিনিধিরা বলেন, আমরা বৈষম্যের শিকার হয়েছি। আমাদের সাথে অন্যায় হয়েছে, অবিচার হয়েছে। আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জনগণের বিপুল পরিমাণ ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। আমরা আমাদের পদ ফেরত চাই।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবির মুখে- গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর পর ১২ আগস্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের উপস্থিতির তথ্য চাওয়া হয়।
এরই প্রেক্ষিতে ১২ এবং ১৩ আগস্ট উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের উপস্থিতির তালিকাও পাঠানো হয়। পরে ১৪ আগস্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে অপর আদেশে জানানো হয়- যে সমস্ত উপজেলায় চেয়ারম্যান বা প্যানেল চেয়ারম্যানগণ অনুপস্থিত সেখানে- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ দায়িত্ব পালন করবেন। পরবর্তীতে ১৯ আগস্ট স্থানীয় সরকারের অধীনে সকল জনপ্রতিনিধিদের অপসারণের ক্ষমতা নেয় সরকার। এর পর প্রথমে উপজেলা চেয়ারম্যান এবং পরবর্তীতে ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের অপসারণ করা হয়।
তারা আরো বলেন, শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর দেশের অদ্ভুত পরিস্থিতির মধ্যেও ভাইস চেয়ারম্যানগণ নিয়মিত অফিস করেছেন। কারণ- ভাইস চেয়ারম্যানগণ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত। তারপরেও কেন আমাদের অপসারণ করা হলো?
শুধু তাই নয়, সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার কাউন্সিলরগণ, জেলা পরিষদের সদস্যগণ এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারগণ স্ব পদে বহাল আছেন। সেখানে আমরা কেন স্ব পদে বহাল থাকতে পারিনা?
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তো আমাদের ভাই-বোন ও আমাদের সন্তানেরাও ছিল। যেখানে বৈষম্য দূরীকরণের জন্য আন্দোলন করে নতুন স্বাধীনতা এসেছে- সেখানে আমরা কেন বৈষম্যের শিকার?
অপসারিতরা বলেন, জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দিয়েছেন। আমরা নির্বাচিত হয়েছি মাত্র দেড় থেকে দুই মাস। নির্বাচন করতে গিয়ে আমাদের- আর্থিক, শারীরিক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বর্তমানে আমরা মানসিক ও সামাজিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত। আর তাই- অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস সহ স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা জনাব হাসান আরিফের সুদৃষ্টি কামনা এবং ন্যায়বিচার দাবি করছি।
“সময় সিলেট টিভিকে”-দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আছমা আখতার চৌধুরী বলেন, আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। তিনি আরো বলেন প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন সারা বাংলাদেশের মানুষ একটি পরিবার। প্রতিটি মানুষকে রাষ্ট্রের সকল ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়া হবে। তাহলে আমরা কেন এই সরকারের প্রথম বৈষম্যের শিকার হলাম। আশা করছি সরকার আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে স্ব পদে দ্রুত বহাল করবেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- লায়লা বানু, ব্যারিস্টা। আশরাফ, মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, সোহেল রানা, হানিফ আহমেদ, আব্দুস সবুর, মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম, মোছা. রুনা আক্তার, সুলতানা হক, স্বপ্ন আক্তার প্রমুখ।